ইসলামী ভাবধারায় যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে আগামীকাল বুধবার দিবাগত রাতে সারাদেশে পবিত্র শবে মি’রাজ উদযাপিত হবে। মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ তথ্য জানায়।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পবিত্র শবে মি’রাজ উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বুধবার বাদ আসর ‘লাইলাতুল মি’রাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক এক ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব কাজী নূরুল ইসলাম সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মহিউদ্দিন কাসেম মি’রাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিষয়ে জ্ঞানগর্ব আলোচনা করবেন।
বুধবার দিন শেষে রাতের আঁধার নামলেই আবির্ভাব ঘটবে এক অলৌকিক, অসামান্য, মহাপূণ্যে ঘেরা রজনী। এ রজনী মহাপবিত্র মহিমান্বিত লাইলাতুল মে’রাজের। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নবুওয়াতের একাদশ বর্ষের ২৬ রজবের দিবাগত গভীর নিশিথে মহান আল্লাহর খাস রহমতে হযরত জিব্রাঈল আলাহিস্সালামের সাথে পবিত্র কাবা হতে ভূমধ্যসাগরের পূর্ব তীরে ফিলিস্তিনে অবস্থিত পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস হয়ে সপ্তাকাশের উপর সিদরাতুল মুনতাহা, অতঃপর সত্তর হাজার নূরের পর্দা পেরিয়ে আরশে আজিমে মহান আল্লাহ তা’য়ালার দিদার লাভ করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে দুনিয়াতে প্রত্যাবর্তন করেন।
এ ছিল আল্লাহ তা’আলার বিশেষ কুদরত, অলৌকিক নিদর্শন, নবুয়তের সত্যতার স্বপক্ষে এক বিরাট আলামত, জ্ঞানীদের জন্য উপদেশ, মোমিনদের জন্য প্রমাণ, হেদায়েত, নেয়ামত, রহমত, মহান আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্যে হাযির হওয়া, ঊর্ধ্বলোক সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান অর্জন, অদৃশ্য ভাগ্য সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান লাভ, ইহকাল ও পরকাল সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন, স্বচক্ষে জান্নাত-জাহান্নাম অবলোকন, পূর্ববর্তী নবী-রাসূলগণের সাথে সাক্ষাত ও পরিচিত হওয়া, সুবিশাল নভোমণ্ডল পরিভ্রমণ করা, এবং সর্বোপরি এটিকে একটি অনন্য মু‘জিযা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা।
শবে মেরাজের ইবাদত সম্পর্কে হাদিস শরীফে উল্লেখ আছে হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তায়ালা আনহু ও সালমান ফারসী রাদিআল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, নিঃসন্দেহে রজব মাসে এমন একটি মহান দিন ও রাত রয়েছে, কোন মোমিন যদি ঐদিনে রোযা রাখে ও রাতে নামাজে মশগুল থাকে, তার প্রতিদান হবে যেন সে একশ বছর দিনে নফল রোযা ও রাতে নফল নামাজ পড়েছে। সেই মহান রাতটি হলো রজবের সাতাশতম রাত। (গুনিয়াতুত্বালিবীন)। তবে এ রাতকে ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করা, আতশবাজি, আলোক সজ্জা ইত্যাদি সবই বিদ‘আতের পর্যায়ভুক্ত বলে মত দেন উলামারা।
মিরাজ ইসলামের ইতিহাসে এমনকি পুরা নবুওয়াতের ইতিহাসেও এক অবিস্মরণীয় ঘটনা বলে মনে করা হয়। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল নূরে মুজাস্সাম হাবিবুল্লাহ হুজুর -পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম ছাড়া অন্য কোন নবী এই পরম সৌভাগ্য লাভ করতে পারেননি। আর এ কারণেই নূরে মুজাস্সাম হাবিবুল্লাহ হুজুর -পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম সর্ব শ্রেষ্ঠ নবী।