নিউজ ডেস্ক : মানবিক কারণে আশ্রয় দেয়া রোহিঙ্গাদের কারণে আজ পাহাড়ি বনাঞ্চল ধ্বংসের মুখে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় পরিবেশ সপ্তাহ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা, ২০১৯’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
এবারের বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলার প্রতিপাদ্য “শিক্ষায় বন-প্রতিবেশ, আধুনিক বাংলাদেশ”। প্রতিপাদ্যটি অত্যন্ত যুগোপযোগী বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে বড় বড় দেশগুলো দায়ী। অথচ ভুক্তভোগী হচ্ছে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ছোট ছোট দেশ ও দ্বীপ অঞ্চলগুলো।
‘সেজন্য আমরা নিজস্ব পরিকল্পনায় নিজস্ব অর্থায়নে দ্বিতীয়বার সরকারে এসে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়ন করি। এবং সেখানে প্রথমবার আমরা প্রায় ৭শ’ কোটি টাকা দিয়ে একটি ফান্ড করি। এখন আমরা প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা সেই ফান্ডে বরাদ্দ দিয়েছি,’ বলেন তিনি।
ভাষণে অপরিকল্পিতভাবে নগরায়ন ও অর্থনৈতিক অবকাঠামো গড়ে তোলা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিবেশ সুরক্ষায় ১শ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রতিটিতেই বন ও জলাধার থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের এটাও লক্ষ্য রাখতে হবে, যে কোন প্রকল্পের সঙ্গে বৃক্ষ রোপণ করতেই হবে এবং জলাধার সৃষ্টি এবং জলাধার সংরক্ষণ করতে হবে।’
একই সঙ্গে পরিবেশ ও বন রক্ষায় ব্যক্তিগত প্রচেষ্টার গুরুত্ব উল্লেখ করে অফিস-আদালত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সবখানে প্রত্যেককে একটি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমরা যদিও দল হিসেবে অনেক আগে থেকেই এটি পালন করে আসছি, আপনাদের সবাইকে শুধু এটাই আহ্বান করব, প্রত্যেকে অন্তত তিনটি করে গাছ লাগাবেন, একটি ফলজ, একটি বনজ একটি ভেষজ বা ঔষধি।’
নিজের ইচ্ছায় পছন্দ মতো যত বেশি সম্ভব গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব গাছ থেকে কয়েক বছর পরই ভালো পরিমাণ টাকা পাওয়া যায়। ফলের গাছ লাগালে প্রতি বছর ফল বিক্রি করেও অর্থ পাওয়া যায়।
শুধু নিজে না, পরিবারের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদেরকে গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। বলেন, গাছ লাগানোর পাশাপাশি গাছের পরিচর্যাও করা প্রয়োজন। তাই বাচ্চাদের গাছের পরিচর্যা করাও শেখাতে হবে।
অনুষ্ঠানে এ বছর পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনটি ক্যাটাগরিতে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে পাঁচটি ‘জাতীয় পরিবেশ পদক ২০১৯’ প্রদান করেন তিনি।
ভাষণ শেষে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা, ২০১৯’র শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন এবং বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পশ্চিম পাশের মাঠে একটি গাছের চারা রোপন করে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।